জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আমেরিকার নিউ ইংল্যান্ড বোস্টন বিএনপি আয়োজন করে এক বর্ণাঢ্য আলোচনা সভা। ১৭ নভেম্বর শনিবার, বালার্ড ভ্যালে ইউনাইটেড চার্চে, জাতীয়সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ইংল্যান্ড বিএনপি সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম সাইফুল।

অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ ইংল্যান্ড বিএনপির উপদেষ্টা কাজী নুরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আব্দুল হক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলী হায়দার মুনসুর। অনুষ্ঠানটি উপস্তাপনা করেন সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটু।




সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম সাইফুল ৭ই নভেম্বরের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন “যে মহান নেতার হাত ধরে বাংলাদেশে সৈনিক জনতার বিপ্লব সাধিত হয়েছিল সেই বিপ্লব ১৯৭৫ এই শেষ হয়ে যায়নি, সেই বিপ্লব আবারো হবে ইনশাল্লাহ বাংলাদেশের মাটিতে। এই বাকশাল স্বৈরশাসক হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে আবারো বিপ্লব হতে হবে বাংলাদেশে। এবং আমরা , বাংলাদেশের সিপাহী জনতা মিলে সেই বিপ্লব আবারো করবো ইনশাল্লাহ।”

সৈয়দ বদরে আলম সাইফুলের বক্তব্যের কিছু অংশ নিম্মে তুলে ধরা হলো –

“বন্দুক আর অন্যের উপর নির্ভর করে চিরকাল ক্ষমতায় থাকা যায় না। বাকশাল কায়েম করে যেমন শেখ মুজিব ক্ষমতায় থাকতে পারেনি , হাসিনাও পারবে না। শুধু সময়ের বেপার। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমাদের ইউনাইটেড হতে হবে। আপনারা যখন এই দেশে বসবাস করছেন , তখন দেখবেন মাজে মাজে কোথাও লেখা আছে ওই আর মোর স্ট্রংগার দেন বিফোর বিকজ ওই আরে ইউনাইটেড দেন এভার। আমরা যত ইউনাইটেড হবো ততই বাকশালী হাসিনার পতন ত্বরান্বিত হবে।”




“আমার এক বড়ো ভাই বলে গেলেন , উনি মুনার সাথে জড়িত , যে আমরা যদি ধর্ম কর্ম হাদিস কালাম নামাজ শিক্ষা এই গুলাই করে থাকি , তাহলে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করবে। কিন্তু আমাদের মহান নবী মুহাম্মদ সাঃ ও বিপ্লবের পথ দেখিয়েছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনিও যুদ্ধ করেছেন। ইসলামের পতাকা উত্তলনের জন্য তিনি যেমন হিজরত করেছেন, তিনি তেমন যুদ্ধ করেছেন। আমাদের মসজিদ ভেঙ্গে দিবে আমরা প্রতিবাদ করবো না ,আমাদের মাদ্রাসা বন্ধ করে দিবে আমরা প্রতিবাদ করবো না , আমরা ওয়াজ মাহফিল করবো , আমাদের থানার অফিসারের কাছ থেকে লিখিত আনতে হবে কি বক্তব্য হবে। শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলিম দেশে সেটা হতে পারে না। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে।”

“আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমাদের শুধু নামাজ পড়লেই হবে না , নামাজ পড়ার অধিকারও আদায় করতে হবে।”


“যখন নির্বাচন আসে তখন আমরা চিন্তা করতাম আমরা জিতবো কি জিতবো না , জনগণ ভোট দিবে কি দিবে না। এখন সেটা বড় কথা নয় , বড়ো কথা হলো হাসিনা কাকে কয়টা আসন দিবে। এটা অন্যায়। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।”

“আমাদের মহা নায়ক , স্বাদীনতার ঘোষক যে বিপ্লপের পথ দেখিয়েছেন , সেই বিপ্লবের পথ দিয়ে আমাদের আগাতে হবে। আমরা নির্বাচন করবো , নির্বাচনের মাঠে থাকবো এবং সেই সাথে সাথে সংগ্রাম এবং সংগ্রাম চালিয়ে যেতে যবে।”

সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনসুর হায়দার বলেন, “আমাদের আরো একবার ৭ই নভেম্বর , শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে , অন্যায়ের বিরুদ্ধে , জালেমের বিরুদ্ধে কিভাবে রুখে দাঁড়াতে হয়, কিভাবে সংগ্রাম করতে হয়। বন্দুরা আমার আপনারা জানেন বর্তমান বাংলাদেশের যে পরিস্থিতী , সে পরিস্থিতীতে নির্বাচন করার পরিবেশ নাই। তারপরেও জাতীয়তাবাদী দল ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচনে যেতে বাধ্য হয়েছে। ”

 

উপদেষ্টা কাজী নুরুজ্জামান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট উদ্যেশ্য করা বলেন , তার একটি স্বপ্ন, আশা পুরুন হয়েছে। তিনি অনেক আগে থেকেই এরকম একটা ঐক্য বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখে আসছিলেন। যে ঐক্য বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে। তিনি বলেন “আল্লাহর কি রহমত আজকে এখন সেই কাদের সিদ্দিকী , ড: কামাল হোসেন , আসম আব্দুর রহমান এবং সমস্ত বাম পন্থী হোক , চরমপন্থী হোক গনতন্তের জন্য , দেশের উন্নয়নের জন্য একত্রীত হয়ে আজ নির্বাচনে নেমেছেন। ”

তিনি আরো বলেন স্বৈরাচারী সরকারের পতন একমাত্র আন্দোলনের মাধমেই সম্ভব। তিনি পাকিস্তান আমলের কয়েকজন রাষ্ট্র প্রধান ও বিগত এরশাদে সরকারের পতন উদহারণ হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন ” আপনারা আমাকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্তা করেদেন ,আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে যান , কেও যদি মরতে না চায় , আমি সভাসমিতির উপিরিভাগে থাকবো , গুলি খেলে আমি খাবো। মারলে আমাকে মারুক। ঊনসত্তর এর গণ আন্দোলনের মতো। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মতো , ঐকবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে।”

অনুষ্টাতে উপস্তিত ছিলেন বিএনপির উপদেষ্টা তানভীর নেওয়াজ, তার উদ্যেগে গত ১০ই নভেম্বর, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি তে একটি সেমিনার অনুষ্টিত হয়। অনেকে বিশ্বাস করেন তার এই সেমিনারের জন্য ফটো সাংবাদিক ডঃ শহিদুল আলম মুক্তি ত্বরান্বিত হয়।

অনুষ্টানের শেষের সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম সাইফুল  নিউ ইংল্যান্ড বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।