সরকারের দ্বৈতনীতি
মামলার জালে জড়িয়ে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের অন্তত ২৫ জন বিএনপি ও জামায়াত-সমর্থক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে গত এক বছরে সাময়িক বরখাস্ত বা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া মামলা হওয়ায় এবং গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আরও অন্তত ২৫ জনপ্রতিনিধি।
বিপরীতে সরকার-সমর্থক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কারও কারও বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের মামলা কিংবা অভিযোগ থাকলেও তাঁরা নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে কারও বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ থাকার পরও মাসের পর মাস ‘ছুটি’ পাচ্ছেন। আবার কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও গ্রেপ্তার হচ্ছেন না। এমনকি, একজন সাজাপ্রাপ্ত হয়েও জামিন নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নথি থেকে পাওয়া তথ্য এবং ৩০টি জেলা ও উপজেলায় প্রথম আলোর অনুসন্ধানে এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত ছয় বছরের (দুই মেয়াদ) বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে থাকার কারণে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমা সাধারণত হয় না।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি অপরাধ গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আবার একদল অপরাধ করেও সুযোগ পাবেন, আর ভিন্নমতের হলে সামান্য অজুহাতেই হয়রানি করা হবে—এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এতে স্থানীয় সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়। এ ছাড়া যাঁরা এসব জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছেন, সেই নাগরিকদেরও অপমান করা হয়।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক মাধব রায় প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুযায়ীই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আইন অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হলে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তার কিংবা অনুপস্থিতির কারণে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।
0 Comment