ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব: বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি
ভারতের পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করার পর বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া বেড়ে গেছে। ঢাকার কারওয়ান বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম প্রায় টাকা ২০০ প্রতি কেজি উন্নীত হয়েছে, যা আগের দিন ছিল টাকা ১৩০। এই দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ভারতের রফতানি বন্ধ এবং স্থানীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকাকে দায়ী করা হচ্ছে। চিটাগং ও অন্যান্য অংশেও দাম বেড়েছে, যেখানে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম টাকা ১১০ থেকে বেড়ে টাকা ২৪০ হয়েছে।
ভারতের এই রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ এখন অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির দিকে মনোনিবেশ করছে। বাংলাদেশ তুরস্ক ও অন্যান্য দেশ থেকে ১,০০,০০০ টন পেঁয়াজ আমদানির পরিকল্পনা করছে। ভারতের অন্যতম বড় পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে ফসল ক্ষতি ও নতুন ফসলের সরবরাহ বিলম্বিত হওয়ায় দেশটিতে পেঁয়াজের দাম তিনগুণ বেড়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের স্থানীয় প্রশাসন বিক্রেতাদের উচ্চ মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করতে গিয়ে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রেতাদের জরিমানা করেছে। পেঁয়াজের এই দাম বৃদ্ধির ফলে গ্রাহকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন, বিশেষ করে যারা বিদ্যমান উচ্চ জীবনযাপন ব্যয়ের সঙ্গে লড়াই করছেন। বাংলাদেশের বাজারে ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনেক বেশি, কারণ ভারত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজ সরবরাহকারী দেশ। বাংলাদেশ প্রতি বছর গড়ে ৩৫০,০০০ টনের বেশি পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করে।
ভারত সরকার দেশীয় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও স্থানীয় সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করেছে। এর আগে, ভারত সরকার দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০২৩ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের উপর ন্যূনতম $৮০০ রফতানি মূল্য নির্ধারণ করেছিল।
এই ঘটনার পর, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভারতে বাফার স্টক থেকে পেঁয়াজ খুচরা বাজারে টাকা ২৫ প্রতি কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছিল। এছাড়াও, ভারত সরকার অক্টোবর মাস থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানির উপর ন্যূনতম রফতানি মূল্য (MEP) নির্ধারণ করেছিল। এই সময়ে, ভারতের কর্ণাটক ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এদিকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দরিদ্র মানুষদের জন্য টাকা ৩০ প্রতি কেজি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে, যদিও সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ এখন তুরস্ক ও অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করছে, কারণ ভারতের বাজারের পরিস্থিতি এবং রফতানি নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।
0 Comment