নিউ ইংল্যান্ড: বেইনের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাহাবুব ই খোদা খোকা, একজন জনপ্রিয় সামাজিক নেতা, এক মিডিয়া সম্মেলনে এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন।

খোকা প্রথমে ধন্যবাদ জানান সকল ভোটারদের যারা নভেম্বর ১০ এবং ১১, স্বতঃফূর্ত ভাবে ভোট প্রয়োগ করেছিলেন। বিশেষ করে নভেম্বর ১০, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে ভোট দিতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি এবং আমার প্যানেল আপনাদের কাছে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

খোকা বলেন, “বর্তমান কার্যকরী কমিটি ও নির্বাচন কমিশন নিয়ম ভঙ্গ করে অযোগ্য ব্যক্তিদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করেছে। তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।”

তিনি আরও অভিযোগ তুলে ধরেছেন যে, “আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে দুর্নীতিবাজ নির্বাচন কমিশন ও কার্যকরী পরিষদ এবসেন্সী ভোট গ্রহনের নামে বেইনকে কলংকের শেষ স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। সোসাল মিডিয়ায় দেখা গেছে, রাতের অন্ধকারে ডরচেস্টার এলাকায় নির্বাচন কমিশনার আবদুল জলিল ও প্রতিদন্ধী প্যানেলের সদস্যরা কিভাবে অবৈধভাবে ভোট গ্রহণ করেছেন।”

১১ই নভেম্বর শনিবার সারাদিন অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভোটাররা ভোট প্রদান করে,” খোকা বলেন, “বিকেলে নির্বাচন কমিশনার সৈকত আমাদের এজেন্ট ও সম্মানিত অবজারদের আপত্তি থাকা স্বত্ত্বেও গায়ের জোড়ে ভোট গণনা শুরু করে। ভোট গণনার শেষ ভাগে যখন দেখল আমাদের প্যানেল বিপুলভোটে এগিয়ে তখন সকলের আপত্তি এবং বাঁধা উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের মতো দুইটি কালো ট্রাস ব্যাগ মোরানো ভর্তি ব্যালট বক্স নিয়ে আসলো। অবজার্ভার ও আমাদের এজেন্ট এমন কি আমাদের অপজিট প্যানেলের ক্যামপেইন ম্যানেজার জনাব মহিউদ্দিন ভাইয়ের বিরোধিতার পরও কমিশনার সৈকত সেই কালো ব্যাগে ভর্তি রাতের আঁধারের ৬৯৪টি ভোট ১০ ও ১১ তারিখের ব্যালটের সাথে সংযুক্ত করে ফলাফল ঘোষনা করেছেন।”

তার বক্তব্যের শেষে খোকা বলেন, “অন্যায়, অনিয়ম, সেচ্চাচারিতা, কারচুপির মাধ্যমে জয় পাওয়া আত্মতৃপ্তি নিয়ে আপনি সমাজে গ্রহনযোগ্যতা পাবেন না। আসুন আমরা এই পুরো সম্মানিত কমিউনিটিকে কলংক এবং লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করি।

খোকা তার ভাষণে আরও যোগ করেন, “আমরা এই সভ্য সমাজে এমন অপরাধ হতে দেব না। আমরা ইউনাইটেড কমিউনিটির সাথে নিয়ে প্রতিরোধের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।” তিনি বাংলাদেশ কমিউনিটির সকল সদস্যদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে একযোগে সোচ্ছার হওয়ার আহ্বান জানান।

ভোটার লিস্ট নিয়ে খোকা বলেন – ভোট গ্রহণের ২৬ মিনিট পূর্বে নির্বাচন কমিশন খোকাকে ফাইনাল ভোটার তালিকা প্রেরণ করেন। “নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্রের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অক্টোবর ৮ তারিখে আমাকে ভুল, অসম্পূর্ণ ও ফেইক ভোটারের একটা তালিকা ইমেল যোগে প্রেরন করেছিল। আমি প্রিন্ট কপি চাইলে বর্তমান কার্যকরী কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি ভোটার তালিকা আমাকে হস্তান্তর করে। যা ইমেইলে প্রেরন করা ভোটার তালিকা এবং প্রিন্ট কপির সাথে কোনপ্রকার মিল ছিল না। আমরা লিখিত অভিযোগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। দুঃখজনক হলেও সত্য, সর্বশেষ ১০ই নভেম্বর শুক্রবার ভোট গ্রহনের ২৬ মিনিট পূর্বে আমাকে ফাইনাল ভোটার লিষ্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার সৈকত সাহেব আমাকে প্রেরন করেন।

মেইল ইন ভোট নিয়ে বলেন “নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্রের বাহিরে সেচ্চাচারিতা করে মেইল ইন ভোট গ্রহনের ঘোষনা করে। আমরা লিখিত অভিযোগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমাদের কোন কথাই শোনেনি। পরবর্তীতে আদালতের আদেশের মাধ্যমে সেই অনিয়ম আমরা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আদালতের স্বরনাপন্ন হওয়ার পূর্বে আমাদের কমিউনিটির সম্মানিত সিনিয়ররা এই ঘোষনার এই সুন্দর সমাধানের উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য নির্বাচন কমিশনার সৈকত সাহেব তাদের কোন অনুরোধই রাখেননি।

খোকার বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। কমিউনিটির মানুষ এখন প্রত্যাশা করছেন এই অবিচারের সঠিক তদন্ত ও সঠিক ব্যবস্থাপনা।